একটি গ্রাম্য প্রবাদ আছে- চোরে নিলে কিছু থাকে, ব্রহ্মায় (আগুনে) নিলে কিছুই থাকে না। আচ্ছা বলুনতো, আগুন লাগার ঘটনা কী বেড়েছে না কমেছে? জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে এর কী কোন সম্পর্ক আছে? ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আগুন নেভাতে আমরা কতটুকু প্রস্তুত?
আগুন লাগার ঘটনা বেড়েছে। কারণ পৃথিবীর উষ্ণতা প্রায় ১.১°C বেড়েছে গেছে। গরমের তীব্রতা ও শুষ্ক মৌসুমের সময়কাল বৃদ্ধি পাওয়ায় অগ্নিকাণ্ডের দুর্ঘটনা বাড়ছে। জনবহুল শহরে অপরিকল্পিত বসতি, পুরাতন অবকাঠামো এবং অনিরাপদ কারখানার কারণে অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি বহুগুণ বেড়েছে। আর সেই সাথে বেড়েছে আগুন নিভানো কর্মীদের জীবনের ঝুঁকি। আগুনের পোড়ার জ্বালা বড় তীব্র।
কী ধরনের ঝুকি এবং প্রাণহানি হয়ে থাকে আগুন লাগার কারণে?
আমি কয়েকটি ঘটনার কথা উল্লেখ করে বিষয়টি খোলসা করতে চাই। আশা করি ২০২১ সালে বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জের প্লাস্টিক কারখানার অগ্নিকান্ডের কথা আপনাদের মনে আছে। দরজা বন্ধ কারখানায় আগুনের সূত্রপাত হলে (চিত্র নং- ১) কমপক্ষে ৫২ জন নিহত হয়।
পাশের দেশ ভারতে ভবনের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় দুর্বলতার কারনে ২০২২ সালে নয়াদিল্লিস্থ মুন্ডকা ভবনে (চিত্র নং- ১) অগ্নিকাণ্ডে ২৭ জন নিহত হয়। পাকিস্তানের করাচিতে সমবায় বাজারে ২০২৩ সালের আগুনে কয়েক ডজন দোকান পোড়ে ছাই হয় এবং ৩.৬ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি ক্ষতি হয়।
চিত্র নং- ১: নারায়নগঞ্জের পলাস্টিক কারখানা এবং মুন্ডকা বাণিজ্যিক ভবনে আগুন লাগার দৃশ্য
দক্ষিণ এশিয়ায় এসকল ঘটনা কেবল আগুনের শিখার গল্প নয়, বরং জলবায়ু পরিবর্তন, দারিদ্র্য এবং অনিরাপদ উন্নয়নের কাহিনীতে ভরা। আগুন এখন আর বিরল কোন দুর্ঘটনা নয়। এগুলি এখন অনুমেয় করুন কাহিনীতে পরিণত হচ্ছে।
তবে প্রতিটি ঘটনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে অগ্নিনির্বাপক দল যাদের কাছে আধুনিক যন্ত্রপাতি নেই কিন্তু তারা জীবন বাজি রেখে লড়ছে। তাদের কেউ কেউ মারাও যাচ্ছ।
ঢাল ছাড়া বীর: মাঠের অগ্নিনির্বাপক কর্মীরা
আমরা প্রায়ই দেখি ঢাকার একজন অগ্নিনির্বাপক কর্মী বিষাক্ত ধোঁয়ায় জ্বলন্ত একটি পোশাক কারখানায় ছুটে যাচ্ছেন উদ্ধার কাজে। তার প্রতিরক্ষামূলক সরঞ্জাম পুরাতন, অক্সিজেন ট্যাঙ্ক অর্ধেক খালি বা অক্সিজেন সিলিন্ডার নেই, মুখে সঠিক মাস্ক নেই, এয়ার প্যাক নেই (চিত্র নং-২)।
চিত্র নং-২: বাংলাদেশের অগ্নিনির্বাপক কর্মী
কিন্তু তিনি নিজের জীবন/স্বাস্থ্যের তোয়াক্কা না করে ধসে পড়া সিঁড়ি বেয়ে উঠে আটকে পড়া শ্রমিকদের উদ্ধার করছেন; রাসায়নিক গুদামের আগুন নেভাতে চেষ্টা করছেন। এটি কোনও কল্পকাহিনী নয়- এটি দক্ষিণ এশিয়া জুড়ে অগ্নিনির্বাপকদের জীবন্ত বাস্তবতা।
বাংলাদেশের ফায়ার সার্ভিস এবং সিভিল ডিফেন্স (FSCD) গুরুত্বপূর্ণ সম্পদের ঘাটতি নিয়ে কাজ করছে। ৪৯২টি ফায়ার স্টেশনের মধ্যে অনেক ক্ষেত্রেই আধুনিক মই, শ্বাস-প্রশ্বাসের যন্ত্র, এমনকি বড় আকারের দুর্ঘটনায় সাড়া দেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত কর্মী নেই।
বর্তমানে এই বিভাগে ২১৭ ধরণের সরঞ্জাম রয়েছে; তবে তা অপর্যাপ্ত। উদাহরণস্বরূপ, দরকারি ৭৫টি টার্নটেবল মইয়ের বিপরীতে আছে মাত্র ১৫টি। এর মধ্যে মাত্র পাঁচটির দৈর্ঘ্য ৬৮ মিটার। সারা দেশের জন্য এই সংখ্যাটি নিতান্তই অপ্রতুল।
পাকিস্তানে করাচির ফায়ার ব্রিগেড ভাঙা ট্রাক এবং পুরানো পাম্পের সাথে লড়াই করছে। ফলে দমকলকর্মীরা বহুতল ভবনের আগুন নেভাতে পারছে না। নেপালে, অগ্নিনির্বাপক কর্মীরা প্রায়শই মোটরসাইকেল বা ছোট ভ্যানে করে আগুন লাগার ঘটনাস্থলে পৌঁছান; কারণ বড় অগ্নিনির্বাপক গাড়িগুলি সরু, ঘনবসতিপূর্ণ রাস্তায় প্রবেশ করতে পারে না।
উন্নত দেশগুলিতে অগ্নিনির্বাপকদের উন্নত প্রতিরক্ষামূলক পোষাক সরবরাহ করা হয়। পক্ষান্তরে দক্ষিণ এশীয় অগ্নিনির্বাপকরা প্রায়শই পাতলা জ্যাকেট পরেন, বিষাক্ত ধোঁয়া সহ্য করার মুখে সঠিক মাস্ক নেই। এই ধরনের সীমাবদ্ধতা তারা নিষ্ঠার সাথে কাজ করছে।
প্রতিটি বড় অগ্নিকাণ্ডে সাধারণ মানুষ অগ্নি নির্বাপনকারিদের অসাধারণ সাহসিকতা দেখতে পায়। চ্যালেঞ্জ তাদের নিষ্ঠা বা সাহসিকতার মধ্যে নয়, বরং প্রাতিষ্ঠানিক অবহেলার মধ্যে রয়েছে। তারা যথাযথ সরঞ্জাম ছাড়াই আগুনের সাথে লড়াই করতে বাধ্য হচ্ছে।
দক্ষিণ এশিয়ায় অগ্নিনির্বাপণের অসুবিধা: মূল চ্যালেঞ্জসমূহ
দক্ষিণ এশিয়ায় অগ্নিনির্বাপণের ক্ষেত্রে মূল সমস্যা হলো প্রযুক্তির অভাব, প্রশিক্ষণের অপ্রতুলতা ও অর্থের অভাব। অধিকাংশ দেশেই আধুনিক অগ্নিনির্বাপণ সরঞ্জাম ও যানবাহনের সংখ্যা কম। ফলে অগ্নিকাণ্ডের সময় তারা দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পারে না।
ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা ও সরু গলি থাকায় অগ্নিনির্বাপণকারীরা সঠিক সময়ে পৌঁছাতে পারে না। তদুপরি জনতা প্রায়শই ভিডিও ধারণ বা মালামাল উদ্ধারের জন্য ছুটে গিয়ে রাস্তা বন্ধ করে। এমন অবস্থার কারণে ২০২২ সালে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড কন্টেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের সময় দাহ্য রাসায়নিক বিস্ফোরণে কমপক্ষে ৪১ জন নিহত হয়।
রাসায়নিক ভর্তি ড্রাম, বাকেট, ইত্যাদিতে দুর্বল লেবেলিং এবং রাসায়নিক দ্রব্য কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে সে বিষয়ে প্রশিক্ষণের অভাবে বহু মানুষের মৃত্যুর কারণ হয়। এছাড়া অগ্নিনির্বাপণ সংক্রান্ত নীতি ও পরিকল্পনার অভাব রয়েছে।
দক্ষিণ এশিয়ায় অগ্নিনির্বাপণ প্রচেষ্টার সুবিধা
সকল প্রতিকূলতা সত্ত্বেও দক্ষিণ এশিয়ার অগ্নিনির্বাপক কর্মীরা উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে চলছেন। তাদের সুবিধাগুলি চারটি ক্ষেত্রে দেখা যায়:
কমিউনিটির আস্থা
প্রায় প্রতিটি দক্ষিণ এশিয়ার দেশে অগ্নিনির্বাপকদের সবচেয়ে সম্মানিত সরকারি কর্মচারি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তাদের ত্যাগ জনসাধারণের প্রশংসা জাগায়।
দ্রুত প্রতিক্রিয়া
সীমিত সম্পদ থাকা সত্ত্বেও অনেক অগ্নিনির্বাপক দল যোগাযোগ করার ১০-১৫ মিনিটের মধ্যে সাড়া দেয়। ফলে প্রাণহানি ও সম্পদের ক্ষতি কম হয়।
ইমপ্রোভাইজেশন দক্ষতা
অগ্নিনির্বাপক কর্মীরা প্রায়শই যে কোনো সম্পদের সাথে খাপ খাইয়ে নেন। যেমন- নেপালে হাইড্র্যান্ট ব্যর্থ হলে জলের বালতি এবং মোটর পাম্প ব্যবহার করা হয়। ভারতে রাসায়নিক কারখানায় বহনযোগ্য ফোম ইউনিট ব্যবহার করা হয়।
সেনাবাহিনীর সাথে সহযোগিতা
ভূমিকম্প বা ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের মতো দুর্যোগে সশস্ত্র বাহিনী প্রায়শই অগ্নিনির্বাপকদের সহায়তা করে। ফলে উদ্ধারকাজ দ্রুত এবং আরো কার্যকর হয়। একটি ঘটনা এখানে উল্লেখ করা হলো-
২০১৯ সনে বনানী, ঢাকা এর বহুতল ভবনে অগ্নিকাণ্ডের সময় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী এবং বিমান বাহিনীর সহায়তায় ২২টি অগ্নিনির্বাপক ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। অগ্নিনির্বাপক কর্মীরা ২০ তলার উপরে আটকে পড়া কয়েক ডজন মানুষকে উদ্ধার করতে ক্রেন এবং দড়ি ব্যবহার করে। ফলে শত শত মাননুষের জীবন রক্ষা হয়।
অর্থায়ন ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতার গুরুত্ব
অগ্নিনির্বাপণে উন্নয়নের জন্য প্রয়োজন পর্যাপ্ত অর্থ। সরকারি বাজেটের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সাহায্য ও দাতা সংস্থাগুলোর সহায়তা অপরিহার্য। উন্নত প্রযুক্তি, প্রশিক্ষণ ও সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বিশ্বব্যাপী সহযোগিতা প্রয়োজন।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক চুক্তি ও প্রোগ্রামগুলো অগ্নি বিষয়ক কার্যক্রমে সহায়তা বাড়াতে পারে। বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ও অন্যান্য দেশের জন্য এই ধরনের অর্থায়ন ও সহযোগিতা অপরিহার্য। এতে করে অগ্নিনির্বাপণের কার্যক্রম আরও শক্তিশালী ও দক্ষ হবে।
জনসচেতনতা ও প্রশিক্ষণের ভূমিকা
অগ্নিনির্বাপণে প্রযুক্তির পাশাপাশি জনসচেতনতা ও প্রশিক্ষণ গুরুত্বপূর্ণ। স্থানীয় মানুষ যদি অগ্নিনির্বাপণের মৌলিক দক্ষতা অর্জন করে, তবে অগ্নিকাণ্ডের ক্ষতি কমানো যায়। বিভিন্ন দেশের সরকার ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলো এ ধরনের প্রশিক্ষণের আয়োজন করে থাকে।
দেহরক্ষা সরঞ্জাম প্রদান ও অগ্নি নিরাপত্তা বিষয়ক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধি করা যায়। জনসচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে অগ্নি দুর্ঘটনা কমানো এবং জরুরি অবস্থায় দ্রুত প্রতিক্রিয়া দেওয়া সম্ভব। এই পদক্ষেপগুলো অগ্নিনির্বাপণের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করবে।
অগ্নিনির্বাপণের জন্য প্রযুক্তির উন্নয়ন ও ব্যবহারের গুরুত্ব
অগ্নিনির্বাপণের জন্য আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার অপরিহার্য। উন্নত অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্রপাতি, ড্রোন, সেন্সর ও অ্যালার্ম সিস্টেম ব্যবহারে অগ্নিকাণ্ডের দ্রুত শনাক্তকরণ ও নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। ড্রোনের মাধ্যমে অগ্নি পরিস্থিতি নিরীক্ষণ, অগ্নিনির্বাপণের জন্য দ্রুত রেসপন্স ও নিরাপদ অবস্থানে থাকার ক্ষেত্রে কর্মীদের জন্য উপকারি।
সেন্সর ও অ্যালার্ম সিস্টেম অগ্নিসংক্রান্ত আগাম সতর্কতা দেয়, যা ক্ষতির পরিমাণ কমায়। তবে এই প্রযুক্তিগুলোর জন্য প্রয়োজন পর্যাপ্ত অর্থায়ন ও প্রশিক্ষণ। সরকারি ও বেসরকারি অংশীদারিত্বে প্রযুক্তির ব্যবহারে অগ্নিনির্বাপণের দক্ষতা বৃদ্ধি সম্ভব।
আশা ও দায়িত্ববোধের গল্প
আসুন আমরা ঢাকার একজন অগ্নিনির্বাপক কর্মীর গল্পে ফিরে আসি। কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের সময় প্রাণ বাঁচানোর পর ধোঁয়ায় দম বন্ধ হয়ে পড়ে যান তিনি। তাকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হয় এবং সুস্থ হওয়ার পর তিনি বলেন, আমি আগুনকে ভয় পাই না; তবে সহায়তা ছাড়া একা থাকতে ভয় লাগে। তার কথাগুলো দক্ষিণ এশিয়ার অগ্নিনির্বাপণ সংগ্রামের সারমর্মকে ধারণ করে।
পুরুষ ও মহিলার অগ্নিনির্বপনকারিরা অপরিচিতদের জন্য মৃত্যুর মুখোমুখি হতে প্রস্তুত। কিন্তু তাদের সাহস প্রাতিষ্ঠানিক অবহেলায় পতিত হোক তা কাম্য নয়। আধুনিক সরঞ্জাম, কঠোর নিরাপত্তা নীতি এবং জনসাধারণের সহযোগিতা প্রদানের মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়া তাদের ত্যাগকে সহানুভূতির পরিবর্তে কর্মের মাধ্যমে সম্মান জানাতে পারে।
আশার আলো এই উপলব্ধি করার মধ্যে নিহিত যে, অগ্নিনির্বাপণ কেবল আগুনের প্রতিক্রিয়া জানানোর বিষয় নয়- এটি নিরাপদ সমাজ গঠনের বিষয়। অগ্নিনির্বাপকদের গল্প শেষ পর্যন্ত আমাদের দায়িত্ব ভাগ করার ম্ধ্য দিয়ে পূর্ণতা পায়।
উদ্ভাবন ও ভবিষৎ পরিকল্পনা
যদিও দক্ষিণ এশিয়ায় অগ্নিনির্বাপণ চ্যালেঞ্জে ভরা; তথাপি উদ্ভাবন এবং বিশ্বব্যাপী সহযোগিতার মাধ্যমে আশার আলো দেখা যাচ্ছে। ভারতের মুম্বাই, দিল্লি এবং বেঙ্গালুরুর মতো মহানগরে অগ্নিনির্বাপক রোবট এবং ড্রোন এর ব্যবহার শুরু হয়েছে।
রবোট, ড্রোন বিপজ্জনক জায়গায় যেতে পারে, জল বা ফোম স্প্রে করতে পারে, এমনকি তাপীয় চিত্রও রিলে করতে পারে। এটি রাসায়নিক বা উঁচু ভবনে আগুন লাগার সময় অগ্নিনির্বাপক কর্মীদের মৃত্যুর হার কমাতে সাহায্য করে।
শিল্প দুর্ঘটনা মোকাবেলায় সরঞ্জাম আধুনিকীকরণ এবং অগ্নিনির্বাপক বাহিনীকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য শ্রীলঙ্কা জাপানি সংস্থাগুলির সাথে অংশীদারত্ব করেছে। একইভাবে নেপাল গ্রামীণ এলাকায় কমিউনিটি অগ্নিনির্বাপক স্বেচ্ছাসেবকদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক এনজিওগুলির সহায়তা পেয়েছে।
নিরাময় ব্যবস্থা বা প্রতিক্রিয়া দেখানোর চেয়ে প্রতিরোধ করা উত্তম। এক্ষেত্রে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো বিবেচনা করা যেতে পারে-
- স্কুল, অফিস এবং কারখানাগুলিতে নিয়মিত অগ্নিনির্বাপণ মহড়া
- ভবন পরিদর্শন এবং আইন অমান্যকারীদের জন্য জরিমানা
- তাপীয় ইমেজিং ক্যামেরা এবং রোবোটিক উদ্ধার ইউনিটের মতো স্মার্ট অগ্নিনির্বাপক সরঞ্জাম
- নিরাপত্তা পদ্ধতি উৎসাহিত করে এমন বীমা ব্যবস্থা
দক্ষিণ এশিয়া যদি এই শিক্ষাগুলি গ্রহণ করে, তাহলে অগ্নিনির্বাপণ আরও নিরাপদ এবং কার্যকর হয়ে উঠতে পারে। প্রযুক্তি এবং নীতি সাহসের সাথে মিলিত হলে অগ্নিনির্বাপণকে বীরত্বের শেষ অবলম্বন না ভেবে সক্রিয় ও সম্প্রদায়-ব্যাপী স্থিতিস্থাপক ব্যবস্থায় রূপান্তরিত হতে পারে।
FAQs
অগ্নিনির্বাপণের জন্য কোন প্রযুক্তিগুলোর ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ?
আধুনিক অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্রপাতি, ড্রোন, সেন্সর, অ্যালার্ম সিস্টেম ও দ্রুত যানবাহন অগ্নি নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ।
জনসচেতনতা অগ্নিনির্বাপণে কেমন ভূমিকা পালন করে?
জনসচেতনতা ও মৌলিক প্রশিক্ষণ দুর্ঘটনা কমাতে সহায়তা করে, দ্রুত প্রতিক্রিয়া সম্ভব হয়।
উন্নত অগ্নিনির্বাপণ প্রযুক্তি ব্যবহারে কি সুবিধা?
দ্রুত শনাক্তকরণ, নিয়ন্ত্রণ ও কর্মীদের নিরাপত্তা বৃদ্ধি।
অগ্নিনির্বাপণে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা কেন প্রয়োজন?
প্রযুক্তি, অর্থায়ন ও প্রশিক্ষণে সহায়তা ও দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন।
দক্ষিণ এশিয়ায় অগ্নিনির্বাপকদের কি আধুনিক সরঞ্জামের অ্যাক্সেস আছে?
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে লম্বা মই, তাপ ক্যামেরা এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের সরঞ্জামের অভাব রয়েছে।
উপসংহার
দক্ষিণ এশিয়ায় জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব, প্রযুক্তির উন্নয়ন ও জনসচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে হবে। আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও সরকারি নীতির কার্যকর বাস্তবায়নের মাধ্যমে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা সম্ভব। অগ্নি নিরাপত্তার জন্য অবকাঠামো, প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তির সমন্বয় একান্ত প্রয়োজন।