আমদের দেহের ভিতর অসংখ্য অনুজীব রয়েছে। তাদের মধ্যে কেউ উপকারি, আবার কেউ ক্ষতিকর (ছবি নং- ১)। তারা কীভাবে আমদের উপকার বা ক্ষতি করে? কীভাবে অন্ত্রের অনুজীবের পরিবেশকে প্রভাবিত করা যায়? খাবার, বিশেষত দই এবং প্রোবায়োটিক গ্রহনের মাধ্যমে তা করা যায়। দই অন্ত্রের মাইক্রোবায়োমে অনুজীবের বৈচিত্র্য বৃদ্ধি করে এবং অন্ত্রের পরিবেশকে সুষম করে।
নিয়মিত দই খাওয়া, বিশেষত টক দই, বিভিন্ন ধরণের উপকারি ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। খনিজ খাদ্যেপোদান শোষণ উন্নত করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়রিয়া এবং ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোমের মতো সমস্যাগুলি উপশম করে।
অন্ত্রের মাইক্রোবায়োটার উপর দইয়ের প্রভাব ব্যক্তিভেদে পরিবর্তিত হতে পারে। তবে সুষমভাবে গ্রহণ অন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য ইতিবাচক এবং দৈহিক সুস্থতার সাথে যুক্ত।
প্রোবায়োটিক হল জীবন্ত ব্যাকটেরিয়া এবং ইস্ট যা খাবারের পরিপূরক হিসেবে গ্রহণ করা হয়। এরা অন্ত্রের জীবাণুর ভারসাম্য উন্নত করে এবং মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ছবি নং- ১: অন্ত্রের উপকারি এবং অপকারি অনুজীব
অন্ত্রের অনুজীবের সাথে রোগরে সম্পর্ক কী?
গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ট্র্যাক্টে সহাবস্থানকারী লক্ষ লক্ষ অণুজীবের বিশৃংখল অবস্থার সাথে মানসিক এবং স্নায়বিক রোগের সম্পর্ক রয়েছে। ইঁদুরের উপর গবেষণার ফলাফল এ বিষয়ে জোরালো প্রমাণ দেখায়। প্রাণীদের নিয়ে গবেষণায় দেখা গেছে যে, মাইক্রোবায়োটা একাধিক উপায়ে মস্তিষ্কের সাথে যোগাযোগ করে এবং মেজামর্জিতে প্রভাব বিস্তার করে।
মাইক্রোবায়োটা-ভিত্তিক চিকিৎসা বিষণ্ণতা এবং উদ্বেগের মতো মেজাজের ব্যাধিতে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য উপকারী হতে পারে। এ ক্ষেত্রে প্রোবায়োটিক গ্রহণ এবং খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমেও ভালো ফলাফল লক্ষ্য করা গেছে। তবে কীভাবে এই কাজ সম্পাদিত হয় তা স্পষ্ট নয়।
বিষণ্ণতায় ভোগা ব্যক্তিদের অন্ত্রের অনুজীব সুস্থ মানুষের থেকে আলাদা। এটা কী শুধুমাত্র কাকতালীয় বিষয়? না, বিষণ্ণতায় ভোগা ব্যক্তিদের মলের অনুজীব ইঁদুরদের দেহে প্রতিস্থাপনের ফলে ইঁদুরের আগ্রহ, আনন্দ এবং উদ্বেগের মতো আচরণের অভাব ছিল। ট্রিপটোফ্যানের বিপাকে পরিবর্তন ঘটেছিল।
ট্রিপটোফ্যান হলো নিউরোট্রান্সমিটার সেরোটোনিনের প্রিকারসর। মানুষ খাদ্যের মাধ্যমে ট্রিপটোফ্যান গ্রহণ করে এবং অন্ত্রের অনুজীব তার বিপাকে সাহায্য করে।
সামাজিক উদ্বেগ ব্যাধি ও অনুজীব
সামাজিক উদ্বেগ ব্যাধি (SAD) হল একটি পঙ্গু মানসিক ব্যাধি যা সামাজিক পরিস্থিতিতে তীব্র ভয় বা উদ্বেগ এবং তাদের এড়িয়ে চলার দ্বারা চিহ্নিত হয়। কোন কোন মানুষ সামাজিক অনুষ্ঠাোদিতে যোগ দিতে ভয় পায় এবং মানেুষের সাথে কথা বলতে চায় না বা এড়িয়ে চলে।
ক্রায়ান (Cryan) এবং তার সহকর্মীরা দেখিয়েছেন যে, সামাজিক উদ্বেগজনিত ব্যাধিতে আক্রান্ত ব্যক্তিদের অন্ত্রের অনুজীব ইঁদুরের দেহে প্রবেশ করালে ইঁদুরের মধ্যেও লক্ষণগুলি দেখা দিতে পারে।
ইঁদুরগুলি হতাশা এবং উদ্বেগ পরীক্ষার সময় স্বাভাবিক আচরণ করলেও সামাজিক ভয়ের প্রতি উচ্চ সংবেদনশীলতা দেখিয়েছিল। এর সাথে দেখা দেয় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং অক্সিটোসিন সিস্টেমে পরিবর্তন। অক্সিটোসিন সিস্টেম সামাজিক আচরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
অন্ত্রের অনুজীব উপকারিতা কীভাবে প্রমাণ করা যাবে?
মল মাইক্রোবায়োটা ট্রান্সপ্ল্যান্টেশন (FMT) এর একটি অসুবিধা হল, উপকারি অনুজীবাগুলিকে পৃথক করা কঠিন। তবে আরো অনুসন্ধান ভবিষ্যতে ফলপ্রসু হবে বলে বিজ্ঞাণীগন মনে করেন। বিশেষত প্রোবায়োটিকের উপর আরো কাজ করা যেতে পারে।
২০২১ সালে, নিকোলোভা (Nikolova) এবং তার সহকর্মীরা পাঁচটি পরীক্ষায় প্রোবায়োটিক আদর্শ সেবা ও চিকিৎসার পাশাপাশি দুটি পরীক্ষায় স্বতন্ত্র থেরাপি হিসেবে ব্যবহার করেন। তাঁরা দেখতে পান যে, প্রোবায়োটিক যা সাইকোবায়োটিক নামে পরিচিত- তা ওষুধের সাথে ব্যবহার করলে বেশ কার্যকর, কিন্তু একা ব্যবহার করলে কোন কাজ হয় না।
উদাহরনস্বরুপ, যে সকল লোক আট সপ্তাহ ধরে তাদের ওষুধের পাশাপাশি মাল্টিস্ট্রেইন প্রোবায়োটিক গ্রহণ করেছেন, তাদের বিষণ্নতা এবং উদ্বেগ-সম্পর্কিত লক্ষণগুলি কন্ট্রোল গ্রুপের তুরনায় কম ছিল।
খাদ্যাভাস কী মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়ন ঘটাতে পারে?
গবেষকরা খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে মাইক্রোবায়োটার পরিবর্তন ঘটিয়ে মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে কিনা তা নিয়ে পরীক্ষা-নীরিক্ষা করছেন। অস্ট্রেলিয়ার একদল গবেষক দেখেছেন যে, ভূমধ্যসাগরীয় খাদ্যাভ্যাসে কিছু পরিবর্তন ঘটিয়ে বিষন্নতা রোগের লক্ষণগুলিকে হ্রাস করা যায়।
খাদ্যতালিকায় পরিবর্তন এবং বয়স অন্ত্রের অনুজীবসমূহের পরিবেশকে প্রভাবিত করে তাদের বৈচিত্র ও প্রাচুর্যে পরিবর্তন ঘটায় (ছবি নং- ২)। কারণ খাবারে অনেক উপাদান থাকে যা অনুজীবগুলি গ্রহণ করে তাদের বৃদ্ধি ঘটায়। এই উপাদানগুলো প্রিবায়োটিক নামে পরিচিত। যদিও সাইকোবায়োটিকগুলি নিয়ে পরীক্ষা-নীরিক্ষা মুখ্য বিষয় হতে পারে, তবুও খাদ্যাভাস পরিবর্তনের মাধ্যমে মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য একটি বিশাল গবেষনার ক্ষেত্র হতে পারে।
ছবি নং- ২: বয়স ও খাদ্যাভাস অন্ত্রের অনুজীবের প্রাচুর্যে প্রভাব বিস্তার করে
অন্ত্রের অনুজীব কীভাবে মানসিক অবসাদ দূর করে?
প্রাণীদের উপর গবেষণায় দেখা গেছে যে, অন্ত্র এবং মস্তিষ্কের মধ্যে দ্বিমুখী যোগাযোগের পথ রয়েছে। এগুলিকে চার ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-
(১) অন্ত্রের অনুজীব রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করে,
(২)। অন্ত্রের জীবাণুগুলি হরমোন-নিঃসরণকারী পিটুইটারি এবং অ্যাড্রিনাল গ্রন্থি এবং হাইপোথ্যালামাস দ্বারা গঠিত একটি নেটওয়ার্কের সাথে যোগাযোগ করে, যাকে হাইপোথ্যালামিক-পিটুইটারি-অ্যাড্রিনাল (HPA) অক্ষ বলা হয়। HPA অক্ষ স্ট্রেস প্রতিক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে প্রধানত স্ট্রেস হরমোন কর্টিসল নিঃসরণের মাধ্যমে।
(৩) অনুজীবাণুগুলি ভ্যাগাস স্নায়ুর মাধ্যমেও যোগাযোগ করে, যা এন্টেরিক স্নায়ুতন্ত্রকে (অন্ত্রকে রেখাযুক্ত নিউরনের একটি জাল) মস্তিষ্কের সাথে সংযুক্ত করে।
(৪) অনুজীব দ্বারা উৎপাদিত বিপাকীয় পদার্থ বিভিন্ন উপায়ে মস্তিষ্কের সাথে যোগাযোগ করতে পারে। কিছু কিছু অনুজীব অন্ত্রের স্নায়ুতন্ত্রের মাধ্যমে তা করে; অন্যরা, যেমন শর্ট-চেইন ফ্যাটি অ্যাসিড, রক্তপ্রবাহে প্রবেশ করে এবং রক্ত-মস্তিষ্কের বাধা অতিক্রম করে সরাসরি মস্তিষ্কে প্রবেশ করতে পারে।
কিছু বিপাকীয় পদার্থ মস্তিষ্কে কাজ করে এমন অন্যান্য অণু, যেমন নিউরোট্রান্সমিটার এবং বৃদ্ধির কারণগুলির সংশ্লেষণকে প্রভাবিত করে।
এই যে অন্ত্র এবং মস্তিস্কের জটলা এক সম্মিলিতভাবে অন্ত্র-মস্তিষ্ক অক্ষ বলা হয়। তবে বর্তমানে মানুষের অসুস্থতায় এর আপেক্ষিক গুরুত্ব সম্পর্কে খুব কমই জানা আছে।
ওষুধ ও প্রোবায়োটিক কীভাবে কাজ করে?
গবেষকরা এখনও পুরোপুরি বুঝতে পারেননি যে, মানসিক চিকিৎসার ওষুধ এবং প্রোবায়োটিক কীভাবে মিথস্ক্রিয়া করে। প্রোবায়োটিকগুলি অ্যান্টিডিপ্রেসেন্টের ক্রিয়া বাড়িয়ে কাজ করতে পারে; অথবা প্রোবায়োটিকগুলি যদি ভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কাজ করে তবে ওষুধগুলির উপর আলাদা প্রভাবও থাকতে পারে।
অনেক সাধারণ অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট ওষুধ সেরোটোনিনকে নিশানা করে। কিছু পরীক্ষায় দেখা গেছে যে, প্রোবায়োটিকগুলি সেরোটোনিন সংশ্লেষণ বৃদ্ধি করতে পারে। এটি প্রোবায়োটিকগুলিকে নির্বাচিত সেরোটোনিন পুনরায় গ্রহণ বাধাগ্রস্থ করে ওষুধের ক্রিয়া বৃদ্ধি করতে পারে এবং প্রচলিত থেরাপিতে একটি কার্যকর সংযোজন হিসাবে সাহায্য করতে পারে। প্রোবায়োটিকগুলি অন্ত্রঅনুজীবের উপর ওষুধের প্রভাবের কারণে সৃষ্ট পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হ্রাস করে সুস্থতা বৃদ্ধি করতে পারে।
তবে এটাও সম্ভব যে, প্রোবায়োটিকসমূহের সংযোজনমূলক প্রভাব রয়েছে। নিউরোট্রান্সমিটার ডোপামিন এবং নোরড্রেনালিনের হ্রাস বিষণ্ণতা এবং উদ্বেগের সাথে যুক্ত। এটি আংশিকভাবে ব্যাখ্যা করতে পারে কেন উদ্বিগ্ন ধরণের বিষণ্ণতায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা সাধারণত অ্যান্টিডিপ্রেসেন্টের প্রতি ভালোভাবে সাড়া দেন না। প্রোবায়োটিকসমূহে ব্যাসিলাস নামক ব্যাকটেরিয়া ডোপামিন এবং নোরড্রেনালিন তৈরি করে। ফলে ওষুধের কার্যকারিতা ভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বৃদ্ধি হয় বলে ধরে নেয়া যায়।
প্রশ্নোত্তর
প্রশ্ন: মানসিক বিষণ্ণতা ও উদ্বেগের সঙ্গে অন্ত্রের অনুজীবসমূহের সম্পর্ক কী?
গবেষণায় দেখা গেছে যে, অন্ত্রের অনুজীবসমূহ (মাইক্রোবাইয়োম) মনোস্বাস্থ্যের সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত। তারা সেরোটোনিন, গামা-অ্যামিনোবিউটারিক অ্যাসিড (GABA) ও অন্যান্য নিউরোট্রান্সমিটার উৎপাদন করে, যা মানসিক উদ্বেগ কমাতে সাহায্য করে।
প্রশ্ন: প্রোবায়োটিক কী এবং এটি কীভাবে মনোস্বাস্থ্যে সহায়তা করে?
প্রোবায়োটিক হলো জীবন্ত অনুজীব, যেমন ল্যাকটোব্যাসিলি ও বিফিডোব্যাকটেরিয়া, যা অন্ত্রের স্বাস্থ্য উন্নত করে এবং মাইক্রোবাইয়োম ব্যালেন্স বজায় রাখতে সহায়তা করে। ফলে মানসিক স্বাস্থ্যও ভালো হয়।
প্রশ্ন: অন্ত্রের অনুজীবসমূহের অভাব বা অস্বাভাবিকতা কি মনোভাবের উপর প্রভাব ফেলে?
হ্যাঁ, অন্ত্রের অনুজীবের ভারসাম্যহীনতা বা অস্বাভাবিকতা মনোভাবের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। বিষণ্ণতা, উদ্বেগ ও মানসিক চাপের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
প্রশ্ন: প্রোবায়োটিক গ্রহণের মাধ্যমে মানসিক বিষণ্ণতা কমানোর বৈজ্ঞানিক প্রমাণ কী?
কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে, প্রোবায়োটিক গ্রহণ মানসিক বিষণ্ণতা ও উদ্বেগের লক্ষণ কমাতে সহায়তা করতে পারে; তবে এর প্রভাব ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হতে পারে এবং আরো গবেষণা প্রয়োজন।
প্রশ্ন: অন্ত্রের স্বাস্থ্য ও মনোস্বাস্থ্যের মধ্যে কী সম্পর্ক রয়েছে?
হ্যাঁ, অন্ত্রের স্বাস্থ্য ও মনোস্বাস্থ্যের মধ্যে এক ধরনের সংযোগ রয়েছে—অন্ত্রের সুস্থতা মনোভাব, মানসিক চাপ ও উদ্বেগ কমাতে সহায়তা করে। এটি ব্রেন-অন্ত্র সংযোগের মাধ্যমে ঘটে।
প্রশ্ন: কোন ধরনের খাবার বা জীবনধারা অন্ত্রের সুস্থতা বজায় রাখতে সাহায্য করে?
ফাইবারযুক্ত খাবার, দই, কেফির, কলা, বাদাম, শাকসবজি এবং প্রাকৃতিক প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ খাবার অন্ত্রের সুস্থতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। পাশাপাশি স্ট্রেস কমানো ও পর্যাপ্ত ঘুম গুরুত্বপূর্ণ।
প্রশ্ন: কীভাবে প্রোবায়োটিকের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা যায়?
প্যাকেজের নির্দেশনা অনুসরণ করে। মানসম্পন্ন ব্র্যান্ডের প্রোবায়োটিক ব্যবহার করা এবং খাদ্যাভ্যাসে অন্ত্রের স্বাস্থ্যের প্রতি মনোযোগ দেওয়া উচিত। প্রয়োজন হলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া ভালো।
প্রশ্ন: অন্ত্রের অনুজীবের ব্যালেন্সহীনতা মানসিক স্বাস্থ্যের কোন লক্ষণসমূহের সঙ্গে জড়িত?
ডিপ্রেশন, উদ্বেগ, মানসিক চাপ, মনোযোগের অভাব এবং অস্থিরতা এই লক্ষণসমূহের সঙ্গে অন্ত্রের ব্যালেন্সহীনতা সম্পর্কিত হতে পারে।
প্রশ্ন: প্রোবায়োটিকের পাশাপাশি প্রাকোবায়োটিক গ্রহণও কী গুরুত্বপূর্ণ?
হ্যাঁ, প্রাকোবায়োটিক হলো অন্ত্রের অনুজীবের জন্য খাদ্য, যেমন ফাইবার যা প্রোবায়োটিকের কার্যকারিতা বাড়ায় এবং অন্ত্রের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।
প্রশ্ন: ভবিষ্যতে মানসিক স্বাস্থ্যে অন্ত্রের অনুজীবসমূহের ভূমিকা নিয়ে গবেষণার কোন দিকগুলো আশা করা যায়?
ভবিষ্যতের গবেষণায় অন্ত্রের অনুজীবের নির্দিষ্ট প্রোফাইল, ব্যক্তিগত ডেটা ও জীববৈচিত্র্য অনুযায়ী কাস্টমাইজড প্রোবায়োটিক থেরাপি বিকাশের আশা করা যায়। এগুলো মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা নিরাময়ে আরও কার্যকর হতে পারে।
সারাংশ
মানসিক বিষণ্ণতা ও উদ্বেগের সঙ্গে অন্ত্রের অনুজীবসমূহের সম্পর্ক নিয়ে গবেষনার গুরুত্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে। অন্ত্রের মাইক্রোবাইয়োটা বা ব্যাকটেরিয়া মনোস্বাস্থ্যের সঙ্গে জড়িত; কারণ তারা সেরোটোনিন, গামা-অ্যামিনোবিউটারিক অ্যাসিড (GABA) প্রভৃতি নিউরোট্রান্সমিটার উৎপাদন করে। এই প্রক্রিয়া মনোভাব, উদ্বেগ ও বিষণ্ণতা কমাতে সাহায্য করে।
প্রোবায়োটিক, যা জীবন্ত অনুজীব, অন্ত্রের স্বাস্থ্য উন্নত করে, সাম্যাবস্থা বজায় রাখে এবং মনোস্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে, প্রোবায়োটিক গ্রহণে বিষণ্ণতা ও উদ্বেগের লক্ষণ কমতে পারে।
পাশাপাশি, পুষ্টিকর খাদ্য ও জীবনধারায় পরিবর্তন অন্ত্রের সুস্থতা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন। ভবিষ্যতে এই ক্ষেত্রের গবেষণা আরও উন্নত হলে মানসিক স্বাস্থ্যে অন্ত্রের অনুজীবের ভূমিকা আরও স্পষ্ট হবে এবং কাস্টমাইজড থেরাপি বিকাশ সম্ভব হবে।