আলঝাইমার রোগী: স্মৃতিশক্তি ও কর্ম দক্ষতা হারিয়ে ফেলা একজন মানুষ

Category: Health & Wellness | Tags: Mental Health

Author: Jatish Chandra Biswas | Published on: July 22, 2025, 11:10 p.m.


স্নায়ুক্ষয়কারী রোগের কারণে অনেক বয়স্ক লোক স্মৃতি বিভ্রম, চিন্তা শক্তি ও কর্মদক্ষতা হারিয়ে ফেলেন। এই রোগগুলোকে বিভিন্ন নামে অভিহিত করা হয়। যেমন- আলঝাইমার (Alzheimer’s disease, AD), পারকিনসন্স (Parkinson’s disease) ও মোটর নিউরণ (Motor neuron disease) রোগ। রোগগুলির মধ্যে লক্ষণগত পার্থক্য রয়েছে। 

আমি আজকে আলঝাইমার রোগ (Alzheimer’s disease, AD) নিয়ে বলবো। এটি একটি জটিল ও ক্রনিক স্নায়ুক্ষয়কারী (Neurodegenerative) রোগ, যা সাধারণত বৃদ্ধ বয়সে দেখা দেয়। এই রোগের ফলে স্মৃতিশক্তি হারিয়ে যায়, কথা বলার সক্ষমতা হ্রাস পায়। তদুপরি চিন্তাভাবনা ও স্বাভাবিক দৈনন্দিন কাজকর্মে সমস্যা দেখা দেয়। নিচে এই রোগের কারণ, কার হয়, সনাক্তকরণ প্রক্রিয়া ও নিরাময়ের উপায় সম্পর্কে আলোচনা করা হলো। 

আলঝাইমার রোগ কেন হয়?

আলঝাইমার রোগের সঠিক কারণ এখনো পুরোপুরি জানা যায়নি। তবে গবেষণায় দেখা গেছে যে এটি বংশগত, পরিবেশগত ও জীববৈচিত্র্যগত কারণগুলোর সমন্বয়ে হয়। মস্তিষ্কের নিউরন (ছবি নং-১) বা স্নায়ুকোষের প্রধান কাজ হল তথথ্যের আদান-প্রদান করা এবং সংকেত প্রেরণ করা। 

ছবি নং-১। নিউরণ- মস্তিস্কের সংবাদ বাহক

 

প্রাপ্তবয়স্ক একজন মানুষের মস্তিষ্কে ৮৬±৮ বিলিয়ন নিউরন রয়েছে বলে অনুমান করা হয়। প্রায় সমান সংখ্যক (৮৫±১০ বিলিয়ন) নন-নিউরোনাল কোষ রয়েছে। কোন কারণে নিউরণ যখন তথ্যের আদান-প্রদানে করতে পারে না তখন প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবে চিন্তা, অনুভূতি, স্মৃতিশক্তি এবং নড়াচড়ায় বাঁধার সৃষ্টি হয়। ব্যক্তির মেজাজ, ব্যক্তিত্ব বা আচরণে পরিবর্তন দেখা দিতে পারে; যেমন উদাসীনতা, বিভ্রান্তি, সন্দেহ ও ভয় বৃদ্ধি।

আলঝাইমার রোগ হওয়ার জন্য যে সকল জেনেটিক (বংশগত) ঝুঁকিকে কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে তার মধ্যে অ্যাপোলিপোপ্রোটিন (apolipoprotein) ই (APOE) জিনটি সবচেয়ে শক্তিশালী। যত সংখ্যক মানুষের আলঝাইমার রোগ হয় তার অর্ধেকেরও বেশি প্রভাবিত হয় APOE জিনের ε4 অ্যালিল এর কারণে আরো জানতে পড়তে পারেন, Raulin et al. 2022 এর লেখা)।

 মূলত আলঝাইমার রোগের কারণে মস্তিষ্কের স্নায়ু কোষের মধ্যে অ্যামাইলয়েড (amyloid β-proteins) ও ‍টাউ-প্রোপ্রিয়ন প্রোটিনের (Tau-proprion protein) অস্বাভাবিক জমাট বাঁধা দেখা যায় (ছবি নং-২)। ফলে স্মৃতি ও চিন্তাভাবনায় ব্যাঘাত ঘটে (বিস্তারিত জানার জন্য Selkoe, 2011 এর লেখা পড়তে পারেন)। তবে এই লক্ষণগুলি আক্রান্ত ব্যক্তিদের কাছে নতুন মনে হলেও তা ২০ বছর বা তারও আগে থেকে শুরু হয়েছে বলে মনে করা হয়।

 

ছবি নং-২। আলঝাইমার রোগে অ্যামাইলয়েড-β এবং টাউ-এর মধ্যে সমন্বয় (উৎস: Busche and Hyman, 2020)

 

১৯৯৩ সনে আলঝাইমার রোগ আবিষ্কারের পর একাধিক বড় বড় জিনোম-ওয়াইড অ্যাসোসিয়েশন স্টাডি (GWAS) এবং GWAS মেটা-বিশ্লেষণের পরেও যা জানতে পারা গিয়েছে তা হলো APOE জিনের ε4 অ্যালিলকে আলঝাইমার রোগের জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী করা হয়। অবশ্য এ তুলনাটি করা হয়েছে ε3 অ্যালিলের সাথে (আরো জানতে পড়তে পারেন Serrano-Pozo et al. 2021 এর লেখা)।

যদিও প্রাথমিক গবেষণায় আলঝাইমার রোগের জন্য APOE-কে অ্যামাইলয়েড-β পেপটাইড জমাট বাঁধা এবং মুক্ত থাকার সাথে যুক্ত করা হয়েছে, তথাপি বিগত কয়েক বছরে APOE প্যাথোজেনেসিস সম্পর্কে আমাদের জ্ঞানের পরিধি বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন অ্যামাইলয়েড-β পেপটাইড-কেন্দ্রিক প্রক্রিয়ার বাইরে যা জানা গেছে তা হলো টাউ নিউরোফাইব্রিলারি ডিজেনারেশন, মাইক্রোগ্লিয়া এবং অ্যাস্ট্রোসাইট প্রতিক্রিয়া এবং মস্তিষ্কে রক্ত চলাচলে বাধা।

 

কে কে এই রোগে আক্রান্ত হতে পারে? 

আলঝাইমার রোগ সাধারণত ৬০ বছরের বেশি বয়স্ক মানুষের মধ্যে দেখা যায়। তবে কিছু ক্ষেত্রে এটি খুবই কম বয়সে (৫০ এর নিচে) শুরু হতে পারে, যাকে "প্রিসেমেন্টাল অ্যালঝাইমার" বলে। পরিবারিক ইতিহাস থাকলে এই রোগের ঝুঁকি বাড়ে। কারণ কিছু জেনেটিক পরিবর্তন যেমন অ্যাপোইলোপ্রোটিন E (APOE) জিনের বিভিন্ন ভ্যারিয়েন্ট এই রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।

আলঝাইমার রোগের ঝুঁকির উপর জাতিগত বৈশিষ্ট এবং APOE জিনোটাইপের মধ্যে একটি সম্পর্ক দীর্ঘদিন ধরেই বিজ্ঞানীদের জানা আছে। আফ্রিকান আমেরিকান এবং হিস্পানিক APOE ε4 বাহকদের ঝুঁকি শ্বেতাঙ্গ APOE ε4 বাহকদের তুলনায় কম এবং এশিয়ান (অর্থাৎ, জাপানি) বাহকদের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি (আরো জানতে পড়তে পারেন, Serrano-Pozo et al. 2021 এর লেখা)।

 

আলঝাইমার রোগ সনাক্তকরণ

আলঝাইমার রোগের প্রাথমিক লক্ষণগুলো হলো স্মৃতি শক্তি হ্রাস, ভাষার সমস্যা, জটিল বিষয় বুঝতে অসুবিধা এবং দৈনন্দিন কাজকর্মে অস্বাভাবিকতা। ডাক্তারের মাধ্যমে সঠিক ভাবে রোগ নির্ণয় করতে বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। যেমন-

ক্লিনিকাল ইন্টারভিউ ও পারিবারিক ইতিহাসের মূল্যায়ন

আলঝাইমার রোগ নির্ণয়ে ক্লিনিকাল ইন্টারভিউ ও পারিবারিক ইতিহাস গুরুত্বপূর্ণ। রোগীর স্মৃতি শক্তি, মানসিকতা, আচরণ ও স্বাভাবিকতা যাচাই করা হয়। পারিবারিক ইতিহাসে রোগের প্রকোপ ও জেনেটিক প্রভাব মূল্যায়ন করা হয়। এভাবে রোগের ধাপ ও অবস্থা নির্ণয় সম্ভব হয়।

 

নিউরোলোজিক্যাল পরীক্ষা

আলঝাইমার রোগ নির্ণয়ে নিউরোলোজিক্যাল পরীক্ষায় রোগীর মানসিক অবস্থা, স্মৃতি শক্তি, ভাষা, চিন্তা করার শক্তি, সমস্যা সমাধান ও মনোযোগের দক্ষতা মূল্যায়ন করা হয়। পাশাপাশি প্যারালাইসিস, স্নায়ু প্রতিক্রিয়া, চোখের দৃষ্টিশক্তি, হাড়ের শক্তি ও সমন্বয়ও পরীক্ষা করা হয়। এই পরীক্ষাগুলি রোগের ধাপ ও প্রকৃতি বোঝার জন্য গুরুত্বপূর্ণ; যা অন্যান্য পরীক্ষার সাথে মিলিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করে।

 

মানসিক কার্যকারিতা মূল্যায়ন (যেমন, মিনিস্কেল পরীক্ষা)

আলঝাইমার রোগ নির্ণয়ে মানসিক কার্যকারিতা মূল্যায়নে মিনিস্কেল পরীক্ষা গুরুত্বপূর্ণ। এটি একটি সংক্ষিপ্ত স্কেল যা রোগীর স্মৃতি শক্তি, মানসিক ধরণ, ভাষার প্রয়োগ, গণনা ও মনোযোগের দক্ষতা মূল্যায়ন করে। পরীক্ষায় ব্যক্তির পরিচিতি, স্থান, সময়, স্মৃতি শক্তি ও মৌখিক ক্ষমতা পরীক্ষা করা হয়। এই মূল্যায়ন রোগের ধাপ নির্ণয়ে সহায়ক; পাশাপাশি রোগীর মানসিক অবস্থা ও অগ্রগতির পর্যবেক্ষণে ব্যবহৃত হয়।

 

ব্রেইন ইমেজিং (সিটি স্ক্যান বা এমআরআই)

ব্রেইনের আকার ও কার্যকারিতা পর্যবেক্ষণের জন্য করা হয়। আলঝাইমার রোগ নির্ণয়ে ব্রেইন ইমেজিং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সিটি স্ক্যান বা এমআরআই দ্বারা ব্রেইনের কাঠামো ও কার্যকারিতা মূল্যায়ন করা হয়। এই ইমেজিং পদ্ধতিগুলি মস্তিষ্কের ক্ষয়, কার্টিকাল স্তর কমে যাওয়া, হাইপারইন্টেনসিটি বা অস্বাভাবিকতা শনাক্ত করে। এগুলি আলঝাইমার রোগের প্রাথমিক ধাপে ব্রেইনের পরিবর্তনগুলি দেখায়। যেমন, হিপোক্যাম্পাসে অঙ্গপ্রত্যঙ্গের ক্ষয়। ব্রেইন ইমেজিং রোগের ধাপ নির্ধারণ ও অন্যান্য রোগের সাথে পার্থক্য করতে সহায়তা করে। 

 

ল্যাবরেটরি পরীক্ষায় রক্তের পরীক্ষা ও অ্যান্টি-বডি শনাক্তকরণ

আলঝাইমার রোগ নির্ণয়ে রক্তের কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা প্রয়োজন হয়। এগুলির মধ্যে রয়েছে জেনেটিক টেস্ট, যেমন এপোলিপোপ্রোটিন E (APOE) এর সংশ্লিষ্টতা পরীক্ষা। এছাড়া অ্যানজাইম ও অ্যান্টি-বডি শনাক্তকরণে রক্তে নির্দিষ্ট প্রোটিনের মাত্রা নির্ণয় করা হয়। যেমন বিটা-আমিলয়েডের অ্যান্টি-বডি বা অন্যান্য নিউরোটক্সিনের স্তর।

অ্যান্টি-বডি শনাক্তকরণে সাধারণত এলাইজা (ELISA) বা ওয়েস্টার্ন ব্লট পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়। এগুলি ব্রেইন ডিমেনশিয়া ও আলঝাইমার রোগ নির্ণয়ে সহায়ক। এছাড়া অন্যান্য রক্ত পরীক্ষায় অঙ্গপ্রত্যঙ্গের কার্যকলাপ, প্রদাহের স্তর ও ভিটামিন ডি পর্যবেক্ষণ করা হয়’ যা রোগের প্রাথমিক ধাপ শনাক্তে গুরুত্বপূর্ণ।

 

নিরাময়ের উপায়

মানব APOE অ্যালিল প্রকাশকারী মাউস মডেলগুলিতে বেশ কয়েকটি থেরাপিউটিক পদ্ধতি সফল হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে APOE স্তর বৃদ্ধি বা হ্রাস করা, লিপিডেশন বৃদ্ধি করা, APOE এবং অ্যামাইলয়েড-β পেপটাইডের মধ্যে মিথস্ক্রিয়া ব্লক করা এবং জেনেটিক্যালি APOE4 কে APOE3 বা APOE2 আইসোফর্মে পরিবর্তন করা। তবে মানব ক্লিনিকাল ট্রায়ালগুলিতে তা করে দেখানো চ্যালেঞ্জিং প্রমাণিত হয়েছে (আরো জানতে পড়তে পারেন, Serrano-Pozo et al. 2021 এর লেখা)। 

অলঝাইমার রোগের ক্রমবর্ধমান প্রকোপ সত্ত্বেও বর্তমানে লক্ষণগুলির চিকিৎসার জন্য মাত্র ছয়টি ওষুধ এফডিএ (Food and Drug Adminitration, FDA) এর অনুমোদন পেয়েছে। তাদের মধ্যে কোলিনস্টেরেজ ইনহিবিটর (cholinesterase inhibitors), NMDA রিসেপ্টর অ্যান্টাগনিস্ট (NMDA receptor antagonists) এবং অন্যান্য নিউরোমোডুলেটরি এজেন্ট যা বর্তমানে আলঝাইমার রোগীদের মনযোগ, চিন্তা শক্তি ও স্মৃতি হারানোর লক্ষণগুলি কমাতে ব্যবহৃত হয় (এ বিষয়ে আরো জানতে Kelley and Peterson, 2007 এর প্রবন্ধ পড়তে পারেন)।

 

ওষুদের ব্যবহার

সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ায় Donanemab (বাণিজ্যিক নাম) Kisunla নামে একটি ড্রাগের অনুমোদন দেয়া হয়েছে যার মূল্য অনেক বেশি ($80,000)। এটি প্রতি চার সপ্তাহ অন্তর বাহুর শিরায় ইনফিউশন হিসেবে দেওয়া হয় এবং সর্ব্বোচ্চ ১৮ মাস ধরে ব্যবহার করার প্রয়োজন হতে পারে (https://www.theguardian.com/society/2025/may/22/australia-approves-donanemab-kisunla-new-drug-treat-early-alzheimers-disease?CMP=share_btn_url)। এটাকে এফডিএ (https://www.fda.gov/drugs/news-events-human-drugs/fda-approves-treatment-adults-alzheimers-disease) অনুমোদন দিয়েছে আমেরিকায় ব্যবহারের জন্য।

 

মানসিক ও শারীরিক ব্যায়াম

আলজাইমার রোগে মানসিক ও শারীরিক ব্যায়াম স্মৃতিশক্তি ও মনোযোগ বৃদ্ধি করে। এগুলো মস্তিষ্কে রক্ত প্রবাহ বাড়ায় এবং নিউরনের সংযোগ শক্তিশালী করে। ব্যায়াম স্ট্রেস কমায়, মানসিক স্বাস্থ্য উন্নত করে এবং ডিমেনশিয়া প্রতিরোধে সাহায্য করে। নিয়মিত শারীরিক ও মানসিক ব্যায়াম মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ফলে রোগের অগ্রগতি ধীর হয়।

 

সামাজিক সম্পৃক্ততা ও পারিবারিক সহায়তা

সামাজিক সম্পৃক্ততা ও পারিবারিক সহায়তা আলঝাইমার রোগীর মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করে। এগুলো রোগীর একাকিত্ব কমায়, মানসিক চাপ হ্রাস করে এবং মনোযোগ ও স্মৃতিশক্তি বজায় রাখতে সহায়তা করে। পরিবারের সমর্থন রোগীর আত্মবিশ্বাস বাড়ায় এবং উদ্বেগ ও বিষন্নতা কমায়। সামাজিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ রোগীর স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বজায় রাখতে এবং মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্য রক্ষা করতে গুরুত্বপূর্ণ।

 

জীবনযাত্রার পরিবর্তন

স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে, প্রচুর ঘুমাতে হবে েএবং কোন মানসিক চাপ নেয়া যাবে না (আরো জানার জন্য ভিজিট করতে পারেন, Alzheimer’s Association, 2023; https://www.alz.org/media/Documents/alzheimers-facts-and-figures.pdf)। সবচেয়ে বড় কথা, হতাশ না হয়ে জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত উপভোগ করতে চেষ্টা করতে হবে। কারণ মৃত্যুকেতো ঠেকানো যাবে না।

 

FAQs

হাতের নার্ভের রোগের লক্ষণ কী কী?

হাত বা আঙুলে অবশ অনুভূতি বা ঝিমঝিম ভাব; হাত বা আঙুলে শক্তি কমে যাওয়া; ধরতে অসুবিধা; হাতের অস্বাভাবিক কম্পন বা ঝাঁকুনি; হাত বা আঙুলে ব্যথা; অঙ্গপ্রত্যঙ্গের অস্বাভাবিক আন্দোলন; সূক্ষ্ম কাজ করতে অসুবিধা; আঘাতের পেলে সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি বা হ্রাস; হাতের অপ্রত্যাশিত আন্দোলন বা অস্থিরতা এবং হাতের নির্দিষ্ট অংশে দংশন অনুভূতি।

 

নিউরোলজি রোগের লক্ষণ কী কী?

দীর্ঘস্থায়ী বা অস্বাভাবিক মাথা ব্যথা, হাত-পা বা শরীরের অন্য অংশে ঝিম ঝিম করা বা দুর্বলতা, স্মৃতি হারানো, বিভ্রান্তি বা সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষত্রে সমস্যা, হঠাৎ শরীরের এক পাশে দুর্বলতা বা কম্পন, অস্পষ্টতা বা ঝাপসা দেখা, হাঁটার সমস্যা, অস্থিরতা বা ভারসাম্যহীনতা, অচেতনতা বা অস্বাভাবিক সংকোচন, অস্বস্তি বা শ্বাসকষ্ট এবং অজানা কারণে ঝাঁকুনি বা অপ্রত্যাশিত অঙ্গপ্রত্যঙ্গের আন্দোলন।

 

আলঝাইমার রোগ কীভাবে নির্ণয় করা হয়?

চিকিৎসক কর্তক সাক্ষাৎকার, নিউরোলজিক পরীক্ষা, মস্তিষ্কের ইমেজিং (সিটি, এমআরআই) ও অন্যান্য নিরীক্ষা দ্বারা নির্ণয় করা হয়।

 

আলঝাইমার রোগ প্রতিরোধের উপায় কী?

নিয়মিত ব্যায়াম, স্বাস্থ্যকর খাদ্য, মানসিক ও সামাজিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ, ধূমপান ও অ্যালকোহল এড়িয়ে চলা।

 

উপসংহার

অলঝাইমার রোগ একটি জটিল ও ধীরে ধীরে অগ্রসর হওয়া রোগ। এর কারণ মূলত বংশগতি, পরিবেশগত ও জীবনধারার উপর নির্ভর করে। এখনো এর সম্পূর্ণ নিরাময় সম্ভব নয়; তবে যত দ্রুত রোগের লক্ষণ শনাক্ত করা যায়, ততই জীবনমান উন্নত করা সম্ভব। সচেতনতা ও প্রাথমিক চিকিৎসার মাধ্যমে রোগের প্রভাব কমানো যায়।