প্রাণী ও মানুষের জীবনমান উন্নয়নে ভেটেরিনারি ওষুধের ভূমিকা অপরিসীম। পশু স্বাস্থ্য রক্ষায় সঠিক ভেটেরিনারি ওষুধ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এগুলোর মাধ্যমে পশুর রোগ প্রতিরোধ ও চিকিৎসা নিশ্চিত হয়। VetMate এর সাহায্য নিয়ে সহজেই সঠিক ব্যবস্থাপত্র তৈরী করা যায়।
তবে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ভেটেরিনারি ওষুধের বাজারে ভেজাল ও নকল ওষুধের ব্যাপক বিস্তার একটি মারাত্মক সমস্যা তৈরি করেছে। এসব ভেজাল ওষুধের কারণে পশুর স্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়ছে; পাশাপাশি মানুষের স্বাস্থ্যের জন্যও ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে।
এমন পরিস্থিতিতে প্রযুক্তির সাহায্য নেয়া, সচেতনতা বৃদ্ধি ও আইন প্রয়োগ সমস্যা সমাধানের পথকে সহজর করতে পারে। TrueMarker প্রযুক্তি ব্যবহার করে একাজটি সহজে করা যাবে। এই প্রযুক্তিটি BytesDoctor এর একটি সুন্দর উদ্ভাবন।
বর্তমান পরিস্থিতি ও চ্যালেঞ্জসমূহ
সারা বিশ্বে প্রতি বছর প্রায় ১-২ বিলিয়ন ডলার মূল্যের ভেজাল/নকল ভেটেরিনারি ওসুধ বিক্রি হয়। এধরনের অবৈধ কার্যকলাপগুলি উন্নয়নশীল এবং উন্নত উভয় বিশ্বেই বিদ্যমান। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইইউর প্রধান বাজারও এর আওতার বাইরে নয়। উন্নত বিশ্বে সাধারনত পোশা প্রাণীর জন্য অনলাইন কেনাকাটায় এমন হয়ে থাকে।
উন্নয়নশীল দেশগুলোতে পশুপালন একটি প্রধান অর্থনৈতিক কার্যক্রম। দেশের অর্থনীতি, খাদ্য নিরাপত্তা ও শ্রমিকদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে পশুপালন গুরুত্বপূর্ণ। এই বাজারে বিভিন্ন ধরনের ভেটেরিনারি ওষুধের চাহিদা ব্যাপক। এই চাহিদার ফায়দা নিতে অনিয়মিত ব্যবসায়ীরা ভেজাল ও নকল ওষুধ তৈরি ও বিক্রির জন্য সুবিধাজনক পরিবেশ সৃষ্টি করে। ফলে বাজারে নকল ও ভেজাল ভেটেরিনারি ওষুধের প্রবাহ ক্রমশ বাড়ছে।
নকল ও ভেজাল ভেটেরিনারি ওষুধ নিয়ে ব্যবসা কেন ?
বাজারে নকল ও ভেজাল ভেটেরিনারি ওষুধ থাকার কারণগুলো হলো, অপরাধী চক্রের অসৎ উদ্দেশ্য, কম মানের উপাদান ব্যবহার, বাজারে তদারকির অভাব, অপ্রতুল নজরদারি এবং দ্রুত মুনাফা লাভের লোভ। এসব কারণে মানসম্মত ওষুধের পরিবর্তে ভেজাল পণ্য বাজারে প্রবেশ করে
অতিরিক্ত লাভের আকাঙ্ক্ষাঃ কম মানের ভেটেরিনারি ওষুধ কম দামে তৈরি করে অধিক মুনাফা অর্জনের লক্ষ্য থাকে। উদাহরণস্বরূপ, কিছু অসাধু কোম্পানি অপ্রতুল উপাদান দিয়ে ভেজাল অ্যান্টিবায়োটিক তৈরি করে বাজারে বিক্রি করে। এতে তারা কম খরচে বেশি মুনাফা করে। কিন্তু পশু ও মানুষের স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়।
নিয়ম ও আইন প্রয়োগের অভাবঃ অধিকাংশ দেশে ভেজাল বিরোধী কঠোর আইন থাকলেও তার কার্যকারিতা কম। কারণ আইন বাস্তবায়নে দুর্বল মনিটরিং ও নজরদারির অভাব। উদাহরণস্বরূপ, বাংলাদেশে কঠোর আইন থাকা সত্ত্বেও ভেজাল ওষুধের অনিয়ম অব্যাহত রয়েছে। কর্পোরেট স্বার্থ, দুর্নীতি ও অপ্রতুল প্রশাসনিক সক্ষমতার কারণে আইন কার্যকর হয় না। ফলে ভেজাল পণ্য বাজারে প্রবেশ অব্যাহত থাকে।
প্রযুক্তির অভাবঃ বিশ্বের অনেক দেশে ট্রেকিং ও মান নিয়ন্ত্রণের জন্য আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার কম। ফলে পণ্যের উৎপাদন ও বাজার ব্যবস্থাপনায় পর্যবেক্ষণ দুর্বল হয়। উদাহরণস্বরূপ, বাংলাদেশে গবাদি পশুর ট্রেকিং সিস্টেম বা খাদ্যপণ্যের মান নিয়ন্ত্রণে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার খুব কম। এর ফলে পশুর অবস্থা বা খাদ্যের মাণ ঠিকভাবে নিরীক্ষণ করা সম্ভব হয় না। এতে অবৈধ চোরাচালান, ভেজাল ও মানহীন পণ্য বাজারে প্রবেশের ঝুঁকি বাড়ায়।
তথ্য ও সচেতনতার অভাবঃ পশুপালক ও বিক্রেতাদের মধ্যে ভেজাল ওষুধের বিষয়ে সচেতনতা কম। ফলে তারা অবাধে ভেজাল ওষুধ ব্যবহার ও বিক্রয় করে থাকেন। উদাহরণস্বরূপ, অনেক পশুপালক জানেন না ভেজাল ওষুধের ফলে পশুর স্বাস্থ্যে ক্ষতি হয় এবং খাদ্যে ক্ষতিকর পদার্থ থাকতে পারে।
বিক্রেতারা প্রায়ই কম দামে ভেজাল ওষুধ বিক্রি করেন। কারণ তাদের এর ফলাফল সম্পর্কে ধারণা নেই বা সতর্কতা অবলম্বন করেন না। এর ফলে পশু ও মানুষের স্বাস্থ্যে মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি হয়। সচেতনতা বৃদ্ধি না হলে এই সমস্যা দূর হবে না।
ভেজাল ড্রাগস/ওষুধের প্রভাব ও ক্ষতি
প্রাণীর স্বাস্থ্যের ক্ষতিঃ ভেজাল ভেটেরিনারি ওষুধের কারণে পশুর রোগের উপশমের পরিবর্তে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে। এসব ভেজাল ওষুধ ব্যবহারে পশুর স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটে, রোগের লক্ষণ বেড়ে যায় এবং সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে (আরো পড়ার জন্য Kingsley, 2015। ফলে রোগ নিরাময় কঠিন হয়ে পড়ে এবং অর্থনৈতিক ক্ষতিও বাড়ে।
অর্থনৈতিক ক্ষতিঃ ভেজাল বা নকল ভেটেরিনারি ওষুধ ও ড্রাগস ব্যবহারের কারণে পশুপালকদের লাভ কমে যায়। কারণ চিকিৎসা সঠিক না হওয়ায় পশুর রোগের উন্নতি হয় না বা আরও গুরুতর হয়ে ওঠে। এর ফলে পশু মৃত্যুহার বেড়ে যায় এবং পশু বিক্রির সংখ্যা কমে যায়।
উদাহরনস্বরূপ, যদি একটি কোরবানির পশুরকে নকল ওষুধ দেওয়া হয়, তবে সে পশুর স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটে এবং শেষ পর্যন্ত প্রাণহানি ঘট পারে। এতে পশুপালকদের আর্থিক ক্ষতি বাড়ায়।
জনস্বাস্থ্যের ঝুঁকিঃ ভেজাল বা ভুলভাবে লেবেলযুক্ত ওষুধ দিয়ে পশুদের চিকিৎসা করালে ক্ষতিকারক পদার্থের অবশিষ্টাংশ মাংস এবং দুগ্ধজাত পণ্যে প্রবেশ করতে পারে; খাদ্য শৃঙ্খলকে দূষিত করতে পারে। উদাহরনস্বরূপ- আফ্রিকায় নকল ওষুধের কারণে নাগানার মতো রোগে বার্ষিক ৪.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ক্ষতি হয়েছে (এফএও ২০১৩ এর রিপোর্ট পড়তে পারেন)।
ভেজাল বা নকল এন্টিবায়োটিক ব্যবহারের কারনে এন্টিবায়োটিক প্রতিরোধী অনুজীবের সংখ্যা বেড়ে গিয়ে মানুষের মৃত্যু বাড়িয়ে দিচ্ছে। উদাহরনস্বরুপ,২০১৯ সনে ১২.৭ মিলিয়ন মানুষের মৃত্যু হয় জীবাণু প্রতিরোধের বিকাশের কারণে (আরো পড়ার জন্য দেখতে পারেন- WHO, 2020)
বিশ্বাসের অভাবঃ বাজারে ভেজাল ভেটেরিনারি ওষুধের কারণে পশু ও মানুষের মধ্যে চিকিৎসার ওপর বিশ্বাস কমে যায়। ফলে গ্রাহকেরা নতুন ও কার্যকর ওষুধে নির্ভরশীল হয় না। উদাহরণস্বরূপ, পশু রোগে ভেজাল ওষুধ ব্যবহারে রোগের উন্নতি না হওয়ায় পশুপালকরা চিকিৎসা অবহেলা করতে পারেন। এতে পশুর উৎপাদন কমে যায়, দামের ওপর প্রভাব পড়ে। এমন পরিস্থিতি বাজারের আস্থা কমিয়ে, অর্থনৈতিক ক্ষতি এবং ব্যবসায়ের অবনতি ঘটায়।
সার্কভুক্ত দেশে ভেজাল/নকল ভেটেরিনারি ওষুধ
সার্কভুক্ত দেশগুলো হলো বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, ভুটান ও মালদ্বীপ। এই দেশগুলোতে পশুপালন একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক কার্যক্রম হলেও ভেজাল ও নকল ভেটেরিনারি ওষুধের ব্যাপক ব্যবহার পশু ও মানবস্বাস্থ্য, অর্থনীতি ও খাদ্য নিরাপত্তার জন্য গুরুতর হুমকি সৃষ্টি করছে (সারণী-১ দেখুন)।
এই ক্ষতির পরিমাণ খুবই উল্লেখযোগ্য, বিশেষ করে ভারত, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে। সমাধানের জন্য প্রয়োজন আধুনিক প্রযুক্তি, শক্তিশালী আইন ও নিয়ম, সচেতনতা বৃদ্ধি ও আন্তঃদেশীয় সহযোগিতা। এই সব উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে, ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনা সম্ভব হবে এবং পশু ও মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাবে।
প্রাণীর মৃত্যুহার বৃদ্ধিঃ নকল বা ভেজাল ওষুধের কারণে পশুর মৃত্যুহার ১৫-২০% পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। বিশেষ করে, সময়মতো চিকিৎসা না পেয়ে বা ভুল চিকিৎসায় পশুর জীবন হারানোর সংখ্যা বাড়ছে।
রোগের জটিলতা ও পুনরাবৃত্তিঃ ভেজাল ওষুধের কারণে রোগের উপশম হয় না বা সময়মতো উপশম হয় না, ফলে রোগের জটিলতা বাড়ে। এতে পশুদের সুষম খাদ্য ও উৎপাদনক্ষমতা কমে যায়।
উৎপাদনশীলতার হ্রাসঃ দুধ, মাংসের পরিমাণ ও গুণগত মান কমে যায়, যা সরাসরি অর্থনৈতিক ক্ষতি ডেকে আনে। উদাহরণস্বরূপ, ভারতে, ভেজাল ওষুধের কারণে দুধ উৎপাদনে ১০-১৫% ক্ষতি হতে পারে। আরো বিস্তারিত পড়ার জন্য, Ravinet, 2016।
অর্থনৈতিক ক্ষতিঃ পশুপালকদের জন্য ক্ষতি মূলত রোগে আক্রান্ত পশুর মৃত্যুহার, চিকিৎসার ব্যয়, ও উৎপাদনের কমে যাওয়ায় হয়। ভারতের এক গবেষণায় দেখা গেছে, ভেজাল ওষুধের কারণে বছরে প্রায় ২.৭ বিলিয়ন ডলার ক্ষতি হতে পারে শুধুমাত্র গবাদি পশুর খাত থেকে।
বাজারে অবিশ্বাস্যতাঃ ভেজাল ওষুধের জন্য পশুপালকদের মধ্যে চিকিৎসার ওপর আস্থা কমে যায়, যা দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতিকর।
বিষক্রিয়া ও রোগের বিস্তারঃ ভেজাল ওষুধের মধ্যে বিষাক্ত উপাদান থাকায়, ভেটেরিনারি ওষুধ গ্রহণের ফলে পশু থেকে মানবদেহে বিষক্রিয়া বা অজানা রোগের সংক্রমণ হতে পারে।
রোগের অনিয়ন্ত্রিত বিস্তারঃ ভেজাল ওষুধের কারণে রোগের দ্রুত বিস্তার হয়, যা মহামারির আকার ধারণ করতে পারে।
সার্ক অঞ্চলে ক্ষতির পরিমাণ ও পরিস্থিতি
ক্ষতির পরিমাণ এক এক দেশে একেক রকম যা নানান রকমের কারণের উপর নির্ভরশীল। তবে ভেজাল/নকল ওষুধের ছড়াছড়ি। কৌতুহলি পাঠক Vidhamaly, ২০২২ এর লেখা পড়ে দেখতে পারেন। এখানে সার্ক অঞ্চলের কয়েকটি দেশের অবস্থা তলে ধরা হলো-
ভারতঃ ভারতীয় ভেটেরিনারি ওষুধ বাজারের মূল্য প্রায় ৩.৭৫-৫.২৫ বিলিয়ন ডলার বলে অনুমান করা হয়। এই বাজারে ভেজাল ও নকলের হার আনুমানিক ৩০-৪০% পর্যন্ত [ভারতীয় ভেটেরিনারি ড্রাগস রিপোর্ট (2020)] । ভেজাল ওষুধের কারণে প্রায় ১৫-২০% পশু মৃত্যুহার বৃদ্ধি পেয়েছে। দুধ ও মাংসের উৎপাদন কমে গেছে, যা দেশের মোট কৃষি ও পশুপালন খাতে বছরে হাজার হাজার কোটি রুপির ক্ষতি সৃষ্টি করছে।
ভারতের বিভিন্ন রাজ্য ও অঞ্চল, বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র ও দক্ষিণ ভারতের কিছু অংশে নকল ও ভেজাল ওষুধের ব্যাপক চাহিদা ও বিক্রি হয়। কারণ এই অঞ্চলে পশুপালনের পরিমাণ বেশি এবং নিম্নমানের ওষুধের বাজারে সহজলভ্যতা রয়েছে।
বাংলাদেশঃ বাংলাদেশে বিক্রিত ভেটেরিনারি ওষুধের প্রায় ২৫-৩০% নকল বা ভেজাল। শতাধিক পশু মৃত্যুর ঘটনা দেখা গেছে, যার ফলে বছরপ্রতি লাখো টাকার ক্ষতি হয়। ভেজাল ওষুধে বিষাক্ত উপাদানের কারণে বিভিন্ন অজানা রোগ ছড়িয়ে পড়ছে।
পাকিস্তানঃ ভেজাল ওষুধের কারণে পশুর রোগ ও মৃত্যুর হার বাড়ছে, যা কৃষিখাতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, 20-25% ভেটেরিনারি ওষুধ নকল বা ভেজাল।
শ্রীলঙ্কা, নেপাল ও ভুটানঃ এই দেশগুলোতেও ভেজাল ওষুধের ব্যাপক প্রভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিশেষ করে, নিম্নমানের ওষুধ ব্যবহারের কারণে পশুর সংক্রমণ ও মৃত্যুহার বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ভেজাল ভেটেরিনারি ড্রাগস কীভাবে বাজারে প্রবেশ করে?
অফলাইন বাজারেঃ বাজারে অপ্রমাণিত দোকান, অজানা বিক্রেতা, অপ্রাপ্তবয়স্ক ব্যবসায়ী বা অবৈধ ব্যবসায়ী দ্বারা ভেজাল ওষুধ বাজারে ঢোকে। উদাহরণ: ভারতে, অপ্রমাণিত ওষুধের দোকানে সন্দেহজনকভাবে কম দামে নকল ওষুধ বিক্রি হয়।
অনলাইন প্ল্যাটফর্মঃ সোশ্যাল মিডিয়া, ফেসবুক, ই-কমার্স ওয়েবসাইটে অনেকে কম দামে নকল ভেটেরিনারি ওষুধ বিক্রি করে। উদাহরণ: নেপালে, অনলাইন বাজারে অজানা বিক্রেতাদের মাধ্যমে অপ্রমাণিত ওষুধের অর্ডার আসে।
অপ্রমাণিত আমদানির মাধ্যমেঃ নকল বা ভেজাল ওষুধের বড় উৎস হলো অবৈধ আমদানি, যেখানে মানসম্পন্নতা পরীক্ষা ছাড়াই ওষুধ প্রবেশ করে।
প্রযুক্তির সম্ভাবনা ও সমাধান
বর্তমান যুগে প্রযুক্তি আছে বা তৈরী হচ্ছে। নিজেদেরকে সেইভাবে প্রস্তুত করলে ভেজাল/নকল ভেটেরিনারি ওসুধ/ড্রাগ এর বিরোদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব। যেমন-
(১) ট্রেকিং ও স্বচ্ছতা বৃদ্ধি
ব্লকচেইন প্রযুক্তিঃ প্রতিটি ওষুধের উৎপাদন, ট্রান্সপোর্ট ও বিক্রির তথ্য ডিজিটালি রেকর্ড করে বিশ্বাসযোগ্যতা নিশ্চিত করা।
QR কোডঃ প্রতিটি প্যাকেটে QR কোড সংযুক্ত করে। এক্ষেত্রে TrueMarker বিশেষ অবদান রাখতে পারে। পশুপালক বা ক্রেতা সহজে ওষুধের উৎস ও মাণ যাচাই করতে পারে।
মোবাইল অ্যাপসঃ সচেতনতা বৃদ্ধি ও তথ্য সরবরাহের জন্য মোবাইল অ্যাপ চালু করা।
স্বচ্ছ প্রেসক্রিপশনঃ অনেক সময় কোন কোন ডাক্তারগণের লেখা ভালোভাবে বুঝা যায় না। এ ক্ষেত্রে ই-প্রেসক্রিপশন একটি সুন্দর উদ্যোগ হতে পারে। VetMate এর সাহায্য নেয়া যেতে পারে।
(২) সচেতনতা ও শিক্ষামূলক কার্যক্রম
পশুপালকদের জন্য ট্রেনিং, কর্মশালা ও ওয়েবিনার আয়োজন। সোশ্যাল মিডিয়া ও স্থানীয় মিডিয়ার মাধ্যমে ভেজাল ওষুধের বিপদ সম্পর্কে প্রচার। স্থানীয় বাজার ও দোকানে সচেতনতা কার্যক্রম চালানো।
(৩) আইন ও প্রয়োগ
শক্তিশালী আইন প্রণয়ন ও তা কার্যকরভাবে প্রয়োগ। ভেজাল ওষুধের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা। অবৈধ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান।
উপসংহার
ভেজাল ও নকল ভেটেরিনারি ড্রাগস বা ওষুধের সমস্যা একটি জটিল ও বহুমাত্রিক বিষয়, যা শুধুমাত্র জাতীয় স্তরে নয়, বরং আন্তর্জাতিক পর্যায়েও সমাধান চায়। প্রযুক্তি, আইন ও সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে এই সমস্যা মোকাবেলা করা সম্ভব। এর ফলে পশুপালন ও জনস্বাস্থ্য উন্নত হবে, অর্থনৈতিক ক্ষতি কমবে এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।
আমাদের সবাইকে একসাথে এগিয়ে আসতে হবে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য, যাতে ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য সুস্থ ও নিরাপদ পরিবেশ গড়ে তোলা যায়। ডিজিটাল প্রযুক্তি যথা- VetMate and TrueMarker ব্যবহার করা যেতে পারে।